ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? ব্লগ তৈরির নিয়ম
বর্তমানে ব্লগিং একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং আয়ের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে
উঠেছে । এই ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? এবং ব্লগ তৈরির নিয়ম সম্পর্কে জানতে
অনেকেই আগ্রহী। কিন্তু ব্লগ তৈরির নিয়ম অনলাইনে খুঁজে পান না। আজ আপনাদের
জন্য ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? এবং ব্লগ তৈরির নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত
এবং সঠিক তথ্য শেয়ার করব।
ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল মাধ্যমের বিস্তারের সাথে সাথে ব্লগের চাহিদা এবং
জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকের আর্টিকেলে একটি নতুন ব্লগ তৈরির
নিয়ম, প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং ব্লগ সাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায় এ সকল তথ্য
জানতে পারবেন। চলুন দেরি না করে জেনে নেই কিভাবে একটি নতুন ব্লগ তৈরি করা যায়।
পেজ সূচিপত্রঃ ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? ব্লগ তৈরির নিয়ম
ভূমিকা
ব্লগিং হলো ইন্টারনেটে একটি জনপ্রিয় এবং কার্যকরী মাধ্যম যেখানে ব্যক্তি বা
প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করে এবং তথ্য শেয়ার করে। এটি একটি
প্ল্যাটফর্ম যা মানুষের মতামত, চিন্তা, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সুযোগ
দেয়। ব্লগের মূল চালিকাশক্তি হলো এর বিষয়বস্তু, যা পাঠকদের আকর্ষণ করে এবং
তাদের নিয়মিতভাবে ফিরে আসতে উৎসাহিত করে।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং করে লাখ টাকা আয়
ব্লগিংয়ের মাধ্যমে মানুষ তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও দক্ষতা প্রকাশ করতে পারে,
পাঠকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে এবং এমনকি আয়ের উৎসও সৃষ্টি করতে পারে।
ব্লগ তৈরি এবং নিয়মিতভাবে আপডেট করা, এটি শুধুমাত্র একটি সৃজনশীল প্রক্রিয়া
নয় বরং একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলাফল। সঠিক পদ্ধতি এবং নিষ্ঠার সাথে
ব্লগিং করলে এটি একজন ব্লগারের জন্য সাফল্য ও খ্যাতির দরজা খুলে দিতে পারে।
ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? ব্লগ তৈরির নিয়ম
ব্লগের মূল চালিকাশক্তি হলো এর সামগ্রিক বার্তা এবং তার পাঠকদের সাথে যোগাযোগের
ক্ষমতা। একটি ব্লগ তার লেখকের চিন্তা, অভিজ্ঞতা, এবং জ্ঞানের প্রতিফলন করে এবং
পাঠকদের সাথে একটি সংলাপ তৈরি করে। একজন লেখকের সততা, উদ্ভাবনী শক্তি, এবং তার
বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ব্লগকে অনন্য এবং আকর্ষণীয় করে তোলে।
ব্লগ তৈরির নিয়ম
- পরিকল্পনাঃ আপনার ব্লগের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। কী বিষয়ে লিখবেন এবং কারা আপনার পাঠক হবে তা চিন্তা করুন।
- প্ল্যাটফর্ম নির্বাচনঃ একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন যা আপনার চাহিদা পূরণ করে। ওয়ার্ডপ্রেস, ব্লগার, বা মিডিয়াম এর মতো প্ল্যাটফর্ম বিবেচনা করুন।
- ডিজাইনঃ আপনার ব্লগের জন্য একটি পেশাদারী এবং আকর্ষণীয় ডিজাইন নির্বাচন করুন। পাঠকদের জন্য নেভিগেশন সহজ করুন।
- সামগ্রী তৈরিঃ মৌলিক, তথ্যপূর্ণ, এবং পাঠকদের জন্য মূল্যবান সামগ্রী তৈরি করুন। নিয়মিত পোস্ট করুন এবং সামগ্রীর মান বজায় রাখুন।
- প্রচারঃ সামাজিক মিডিয়া, ইমেইল মার্কেটিং, এবং অন্যান্য চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার ব্লগ প্রচার করুন।
- পাঠকের সাথে যোগাযোগঃ মন্তব্য এবং ফিডব্যাকের মাধ্যমে পাঠকের সাথে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ করুন।
এই নিয়মগুলি অনুসরণ করে, আপনি একটি সফল ব্লগ তৈরি করতে পারবেন যা পাঠকদের জন্য
মূল্যবান এবং আপনার নিজের জন্য পুরস্কারমূলক হবে।
ব্লগিং কি ও ব্লগিং এর কাজ কি?
ব্লগিং কি?
ব্লগিং হল ইন্টারনেটে একটি প্ল্যাটফর্মে ধারাবাহিকভাবে লেখা পোস্ট করা। ব্লগ
সাধারণত ব্যক্তিগত ডায়েরি, মতামত, খবর বা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য শেয়ার করার
জন্য ব্যবহৃত হয়। ব্লগিং-এর মাধ্যমে লেখক তার পাঠকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ
করতে পারে এবং নিজের চিন্তাভাবনা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারে।
ব্লগিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা যায় যেমন প্রযুক্তি,
ভ্রমণ, খাবার, ফ্যাশন, শিক্ষা, এবং আরো অনেক কিছু।
ব্লগিং-এর কাজ কি?
ব্লগিং-এর কাজগুলো বিভিন্ন রকম হতে পারে এবং এর মধ্যে কয়েকটি প্রধান কাজ নিচে
উল্লেখ করা হলোঃ
বিষয়বস্তু তৈরি করা
- লেখালেখিঃ ব্লগ পোস্ট লিখা এবং পোস্ট করা।
- ছবি এবং ভিডিও সংযোজনঃ ব্লগ পোস্টের সাথে সম্পর্কিত ছবি এবং ভিডিও যোগ করা।
- গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ প্রয়োজনীয় ইমেজ, ইনফোগ্রাফিক তৈরি করা।
গবেষণা করা
- তথ্য সংগ্রহঃ নির্ভরযোগ্য তথ্য এবং ডেটা সংগ্রহ করা।
- কীওয়ার্ড গবেষণাঃ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের জন্য উপযুক্ত কীওয়ার্ড খুঁজে বের করা।
- ট্রেন্ড বিশ্লেষণঃ বর্তমান ট্রেন্ড এবং পাঠকদের আগ্রহ বিশ্লেষণ করা।
এসইও (SEO) অপটিমাইজেশন
- কন্টেন্ট অপটিমাইজেশনঃ কীওয়ার্ড, মেটা ট্যাগ, এবং হেডিং ব্যবহার করে কন্টেন্ট অপটিমাইজ করা।
- ব্যাকলিংক তৈরিঃ অন্য ওয়েবসাইট থেকে লিঙ্ক সংগ্রহ করে ব্লগের এসইও উন্নত করা।
- পেজ লোডিং স্পিড উন্নত করাঃ ওয়েব পেজের লোডিং স্পিড বাড়ানোর জন্য প্রযুক্তিগত অপটিমাইজেশন।
ব্লগ প্রচারণা
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি মাধ্যমে ব্লগের প্রচারণা।
- ইমেইল মার্কেটিংঃ নিয়মিত ইমেইল নিউজলেটারের মাধ্যমে পাঠকদের সাথে যোগাযোগ রাখা।
- অনলাইন কমিউনিটিঃ বিভিন্ন অনলাইন ফোরাম বা কমিউনিটিতে ব্লগের প্রচারণা।
পাঠকদের সাথে যোগাযোগ
- কমেন্ট মডারেশনঃ ব্লগ পোস্টের কমেন্টগুলো মডারেট করা এবং পাঠকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া।
- ফিডব্যাক গ্রহণঃ পাঠকদের ফিডব্যাক গ্রহণ করা এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কন্টেন্ট উন্নত করা।
মনিটাইজেশন (আয়)
- বিজ্ঞাপনঃ ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয় করা।
- এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের এফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করে কমিশন আয় করা।
- স্পন্সরশিপঃ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্পন্সরশিপ গ্রহণ করে আয় করা।
- ডিজিটাল পণ্য বিক্রিঃ ই-বুক, কোর্স, এবং অন্যান্য ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করা।
ব্লগিং হল একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে লেখক তার চিন্তা, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা
শেয়ার করেন। এটি পাঠকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের একটি মাধ্যম এবং এটি বিভিন্ন
কাজের মাধ্যমে পরিচালিত হয় যেমন বিষয়বস্তু তৈরি, গবেষণা, এসইও অপটিমাইজেশন,
প্রচারণা, পাঠকদের সাথে যোগাযোগ এবং আয়।
ব্লগিং শুধুমাত্র একটি শখ নয় বরং এটি একটি পেশা হিসেবেও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে
যেখানে লেখকগণ তাদের লেখা এবং জ্ঞান শেয়ার করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি?
ব্লগের মূল চালিকাশক্তি হলো এর সামগ্রিক বার্তা এবং তার পাঠকদের সাথে যোগাযোগের
ক্ষমতা। একটি ব্লগ তার লেখকের চিন্তা, অভিজ্ঞতা, এবং জ্ঞানের প্রতিফলন করে এবং
পাঠকদের সাথে একটি সংলাপ তৈরি করে। একজন লেখকের সততা, উদ্ভাবনী শক্তি, এবং তার
বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ব্লগকে অনন্য এবং আকর্ষণীয় করে তোলে।
একটি ব্লগের সাফল্য নির্ভর করে এর সামগ্রীর মানের উপর। মৌলিক, তথ্যপূর্ণ, এবং
পাঠকদের জন্য মূল্যবান সামগ্রী তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। লেখকের অনন্য কণ্ঠস্বর
এবং বিষয়ের উপর গভীর জ্ঞান পাঠকদের আকর্ষণ করে এবং তাদের ব্লগে ফিরে আসতে
উৎসাহিত করে।
আরো পড়ুনঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম
এছাড়াও, ব্লগের ইন্টার্যাক্টিভ উপাদানগুলি, যেমন মন্তব্য এবং ফিডব্যাক অপশন,
পাঠকদের সাথে সংলাপ তৈরি করে এবং একটি সম্প্রদায় গড়ে তোলে। এই
ইন্টার্যাক্টিভিটি পাঠকদের ব্লগের সাথে আরও জড়িত হতে সাহায্য করে এবং একটি
লয়্যাল অনুসারী তৈরি করে।
সামাজিক মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে ব্লগ প্রচার করা একটি
ব্লগের দৃশ্যমানতা এবং পৌঁছানোর ক্ষমতা বাড়ায়। এই প্রচার নতুন পাঠকদের আকর্ষণ
করে এবং ব্লগের সামগ্রীকে আরও বিস্তৃত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেয়।
সবশেষে, নিয়মিত আপডেট এবং সামগ্রীর মান বজায় রাখা ব্লগের সাফল্যের জন্য
অপরিহার্য। একটি ব্লগ যদি নিয়মিত আপডেট হয় এবং পাঠকদের জন্য মূল্যবান থাকে,
তাহলে তা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য অর্জন করতে পারে।
নতুন ব্লগ তৈরির নিয়ম
নতুন ব্লগ তৈরি করার প্রক্রিয়া বেশ সহজ, তবে সঠিক পরিকল্পনা এবং ধাপে ধাপে কাজ
করলে সফলতা পাওয়া যায়। এখানে নতুন ব্লগ তৈরির বিস্তারিত নিয়ম এবং
পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করা হলো।
১. ব্লগের উদ্দেশ্য এবং বিষয় নির্ধারণ
উদ্দেশ্যঃ ব্লগটি কেন তৈরি করছেন তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করুন।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি শখের জন্য লিখবেন, আপনার পেশাদারী দক্ষতা শেয়ার
করবেন, নাকি আয়ের জন্য ব্লগ তৈরি করবেন?
বিষয়ঃ আপনার আগ্রহের এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে একটি
নির্দিষ্ট বিষয় বা নীচ নির্বাচন করুন। উদাহরণস্বরূপ, প্রযুক্তি, ভ্রমণ,
ফ্যাশন, শিক্ষা, ইত্যাদি।
২. ডোমেইন নাম এবং হোস্টিং নির্বাচন
ডোমেইন নামঃ একটি সহজ, স্মরণযোগ্য এবং আপনার বিষয়ের সাথে
সম্পর্কিত ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন।
হোস্টিংঃ নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ একটি হোস্টিং পরিষেবা
নির্বাচন করুন। কিছু জনপ্রিয় হোস্টিং প্রদানকারী হলো Bluehost,
SiteGround, এবং HostGator।
৩. ব্লগ প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন
ওয়ার্ডপ্রেসঃ সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য ব্লগিং
প্ল্যাটফর্ম। ওয়ার্ডপ্রেস.org এর মাধ্যমে স্ব-হোস্টেড ব্লগ তৈরি করা যায়।
ব্লগারঃ গুগলের ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, যা বিনামূল্যে ব্যবহার করা
যায়।
মিডিয়ামঃ একটি সহজ প্ল্যাটফর্ম যা মূলত লেখার উপর ভিত্তি করে।
৪. ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টলেশন (যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন)
ইনস্টলেশনঃ হোস্টিং প্যানেল থেকে ওয়ার্ডপ্রেস সহজেই ইনস্টল করা
যায়।
থিম নির্বাচনঃ একটি উপযুক্ত থিম নির্বাচন করুন যা আপনার ব্লগের
বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্লাগিন ইনস্টলেশনঃ কিছু প্রয়োজনীয় প্লাগিন ইনস্টল করুন,
যেমন Yoast SEO (SEO এর জন্য), Akismet (স্প্যাম কমেন্ট ব্লক করার জন্য),
এবং Jetpack (সাইট ম্যানেজমেন্টের জন্য)।
৫. ব্লগ কাস্টমাইজেশন
ডিজাইনঃ ব্লগের ডিজাইন কাস্টমাইজ করুন এবং একটি ব্যবহারবান্ধব
নেভিগেশন মেনু তৈরি করুন।
লোগো এবং ব্যানারঃ আপনার ব্লগের জন্য একটি আকর্ষণীয় লোগো এবং
ব্যানার তৈরি করুন।
পেজ তৈরিঃ প্রয়োজনীয় পেজগুলো তৈরি করুন, যেমন "About",
"Contact", "Privacy Policy", ইত্যাদি।
৬. বিষয়বস্তু তৈরি এবং প্রকাশ
প্রথম পোস্টঃ একটি আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল প্রথম পোস্ট লিখুন।
ব্লগ পোস্টঃ নিয়মিত ব্লগ পোস্ট লিখুন এবং আপনার পাঠকদের জন্য
মানসম্পন্ন কন্টেন্ট প্রদান করুন।
SEO অপটিমাইজেশনঃ আপনার পোস্টগুলো SEO ফ্রেন্ডলি করুন যাতে
সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ব্লগের র্যাংক বৃদ্ধি পায়।
৭. ব্লগ প্রচারণা
সোশ্যাল মিডিয়াঃ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন ইত্যাদি
প্ল্যাটফর্মে আপনার ব্লগ শেয়ার করুন।
ইমেইল সাবস্ক্রিপশনঃ পাঠকদের ইমেইল সাবস্ক্রিপশন অফার করুন এবং
নিয়মিত নিউজলেটার পাঠান।
অনলাইন কমিউনিটিঃ বিভিন্ন অনলাইন ফোরাম এবং কমিউনিটিতে আপনার
ব্লগ প্রচার করুন।
৮. মনিটাইজেশন
বিজ্ঞাপনঃ গুগল অ্যাডসেন্স বা অন্যান্য বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের
মাধ্যমে ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করুন।
এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের এফিলিয়েট লিঙ্ক
শেয়ার করুন এবং কমিশন আয় করুন।
স্পন্সরশিপঃ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে স্পন্সরশিপ চুক্তি করুন।
নতুন ব্লগ তৈরি করতে হলে প্রথমে ব্লগের উদ্দেশ্য এবং বিষয় নির্ধারণ করতে হবে,
ডোমেইন নাম এবং হোস্টিং নির্বাচন করতে হবে, ব্লগ প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন এবং
ইনস্টল করতে হবে, ব্লগ কাস্টমাইজেশন করতে হবে, মানসম্মত বিষয়বস্তু তৈরি করতে
হবে এবং ব্লগ প্রচারণা করতে হবে। সঠিকভাবে পরিকল্পনা এবং ধাপে ধাপে কাজ করলে
আপনি একটি সফল এবং লাভজনক ব্লগ তৈরি করতে পারবেন।
ব্লগ সাইট তৈরীর প্রয়োজনীয় উপকরণ
ব্লগিং শুরু করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, প্ল্যাটফর্ম এবং টুলসের
প্রয়োজন হয়। এখানে ব্লগিং শুরু করতে যেসব জিনিস লাগবে তা বিস্তারিতভাবে
উল্লেখ করা হলোঃ
১. কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ
কম্পিউটারঃ ব্লগিংয়ের জন্য একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার
প্রয়োজন।
ইন্টারনেট সংযোগঃ নির্ভরযোগ্য এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ
প্রয়োজন।
২. ব্লগের পরিকল্পনা এবং বিষয় নির্ধারণ
উদ্দেশ্যঃ ব্লগটি কেন তৈরি করছেন তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করুন।
এটি শখ, পেশাদারি দক্ষতা শেয়ার করা বা আয়ের জন্য হতে পারে।
বিষয় নির্বাচনঃ একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা নীচ নির্বাচন করুন যা
আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
৩. ডোমেইন নাম এবং হোস্টিং
ডোমেইন নামঃ একটি সহজ, স্মরণযোগ্য এবং আপনার বিষয়ের সাথে
সম্পর্কিত ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন।
হোস্টিংঃ নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ একটি হোস্টিং পরিষেবা
নির্বাচন করুন। কিছু জনপ্রিয় হোস্টিং প্রদানকারী হলো Bluehost,
SiteGround, এবং HostGator।
৪. ব্লগ প্ল্যাটফর্ম
ওয়ার্ডপ্রেসঃ সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য ব্লগিং
প্ল্যাটফর্ম।
ব্লগারঃ গুগলের ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, যা বিনামূল্যে ব্যবহার করা
যায়।
মিডিয়ামঃ একটি সহজ প্ল্যাটফর্ম যা মূলত লেখার উপর ভিত্তি করে।
৫. থিম এবং প্লাগিন
থিমঃ ব্লগের জন্য একটি উপযুক্ত থিম নির্বাচন করুন যা আপনার
বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্লাগিনঃ প্রয়োজনীয় প্লাগিন ইনস্টল করুন, যেমন Yoast SEO
(SEO এর জন্য), Akismet (স্প্যাম কমেন্ট ব্লক করার জন্য), এবং Jetpack
(সাইট ম্যানেজমেন্টের জন্য)।
৬. বিষয়বস্তু তৈরি এবং প্রকাশ
লেখালেখি সরঞ্জামঃ Microsoft Word, Google Docs, বা অন্য কোন
লেখালেখি সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন।
ছবি এবং ভিডিওঃ ব্লগ পোস্টের সাথে সম্পর্কিত ছবি এবং ভিডিও যোগ
করার জন্য ছবি সম্পাদনা সরঞ্জাম যেমন Canva, Adobe Photoshop ব্যবহার করতে
পারেন।
৭. SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)
কীওয়ার্ড গবেষণা সরঞ্জামঃ Google Keyword Planner, SEMrush,
Ahrefs ইত্যাদি সরঞ্জাম ব্যবহার করে কীওয়ার্ড গবেষণা করতে পারেন।
SEO প্লাগিনঃ Yoast SEO, All in One SEO Pack ইত্যাদি ব্যবহার
করতে পারেন।
৮. সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রচারণা
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মঃ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম,
লিঙ্কডইন ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে আপনার ব্লগ প্রচারণা করুন।
ইমেইল মার্কেটিং টুলসঃ Mailchimp, ConvertKit, AWeber ইত্যাদি
ব্যবহার করে ইমেইল সাবস্ক্রিপশন এবং নিউজলেটার পাঠান।
৯. মনিটাইজেশন টুলস
বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কঃ Google AdSense, Media.net ইত্যাদি
বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রামঃ Amazon Associates,
ShareASale, Commission Junction ইত্যাদি এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম
ব্যবহার করতে পারেন।
১০. বিশ্লেষণ এবং ট্র্যাকিং
গুগল অ্যানালিটিক্সঃ আপনার ব্লগের ট্রাফিক এবং পাঠকদের আচরণ
বিশ্লেষণ করার জন্য গুগল অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন।
সার্চ কনসোলঃ গুগল সার্চ কনসোল ব্যবহার করে আপনার ব্লগের SEO
এবং পারফরমেন্স ট্র্যাক করুন।
সারসংক্ষেপ
ব্লগিং শুরু করতে কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ, ডোমেইন নাম এবং হোস্টিং, ব্লগ
প্ল্যাটফর্ম, থিম এবং প্লাগিন, বিষয়বস্তু তৈরি সরঞ্জাম, SEO সরঞ্জাম, সোশ্যাল
মিডিয়া এবং প্রচারণা সরঞ্জাম, মনিটাইজেশন টুলস এবং বিশ্লেষণ ও ট্র্যাকিং
টুলসের প্রয়োজন। সঠিকভাবে এই সরঞ্জাম এবং প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে আপনি
একটি সফল ব্লগ তৈরি করতে এবং পরিচালনা করতে পারবেন।
ব্লগ সাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায়?
ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এখানে কিছু প্রধান উপায়
উল্লেখ করা হলো যা ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্লগ থেকে আয় করতে পারেন।
১. বিজ্ঞাপন (Advertising)
- গুগল অ্যাডসেন্সঃ এটি একটি জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যা আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে এবং প্রতিটি ক্লিকের জন্য অর্থ প্রদান করে।
- ডিসপ্লে অ্যাডসঃ বিভিন্ন বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যেমন Media.net, AdThrive, Mediavine ইত্যাদি ব্যবহার করে ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন যোগ করতে পারেন।
- স্পন্সরড পোস্টঃ বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের স্পন্সরড পোস্ট বা রিভিউ লিখে আয় করতে পারেন।
২. এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
- প্রোডাক্ট রিভিউ এবং রিকমেন্ডেশনঃ বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের রিভিউ লিখে এবং এফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করে কমিশন আয় করতে পারেন।\
- এফিলিয়েট নেটওয়ার্কঃ Amazon Associates, ShareASale, Commission Junction ইত্যাদি এফিলিয়েট নেটওয়ার্কে যোগ দিয়ে আয় করতে পারেন।
৩. ডিজিটাল পণ্য বিক্রি (Selling Digital Products)
- ই-বুকঃ নিজে ই-বুক লিখে এবং ব্লগে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।\
- অনলাইন কোর্সঃ বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করে এবং ব্লগের মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
- প্রিন্টেবলসঃ প্রিন্ট করার জন্য ডিজিটাল পণ্য যেমন প্ল্যানার, চেকলিস্ট ইত্যাদি বিক্রি করতে পারেন।
৪. সার্ভিস প্রদান (Offering Services)
- ফ্রিল্যান্স সার্ভিসঃ লেখালেখি, ডিজাইন, কনসাল্টিং ইত্যাদি সার্ভিস অফার করে আয় করতে পারেন।
- কোচিং এবং পরামর্শঃ আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে কোচিং এবং পরামর্শ প্রদান করতে পারেন।
৫. সদস্যতা (Membership)
- পেইড মেম্বারশিপঃ বিশেষ বিষয়বস্তু বা ফিচারের জন্য পেইড মেম্বারশিপ অফার করতে পারেন।
- প্যাট্রিয়নঃ পাঠকদের কাছ থেকে সাবস্ক্রিপশন ফি সংগ্রহ করতে পারেন প্যাট্রিয়ন এর মাধ্যমে।
৬. স্পন্সরশিপ এবং পার্টনারশিপ (Sponsorship and Partnerships)
- ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপঃ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে স্পন্সরশিপ চুক্তি করতে পারেন যেখানে ব্র্যান্ডগুলি আপনার ব্লগে তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার করে।
- কন্টেন্ট পার্টনারশিপঃ অন্যান্য ব্লগার বা মিডিয়া কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপ করে কন্টেন্ট তৈরি এবং প্রচার করতে পারেন।
৭. ফিজিক্যাল পণ্য বিক্রি (Selling Physical Products)
- ই-কমার্সঃ ব্লগের সাথে একটি ই-কমার্স স্টোর যোগ করে ফিজিক্যাল পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
- ড্রপশিপিংঃ তৃতীয় পক্ষের পণ্য আপনার ব্লগের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন যেখানে স্টক এবং শিপিং এর দায়িত্ব তৃতীয় পক্ষ বহন করে।
৮. ডোনেশন (Donations)
- ডোনেশন বোতামঃ ব্লগে ডোনেশন বোতাম যোগ করে পাঠকদের কাছ থেকে ডোনেশন সংগ্রহ করতে পারেন।
- ক্রাউডফান্ডিংঃ বিভিন্ন ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম যেমন Kickstarter, GoFundMe ইত্যাদি ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন।
৯. ইভেন্ট এবং ওয়ার্কশপ (Events and Workshops)
- ওয়েবিনার এবং ওয়ার্কশপঃ অনলাইন বা অফলাইন ওয়েবিনার এবং ওয়ার্কশপ আয়োজন করে টিকিট বিক্রি করতে পারেন।
- ইভেন্ট স্পন্সরশিপঃ ইভেন্ট স্পন্সরশিপের মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
সারসংক্ষেপ
ব্লগ সাইট থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে যেমন বিজ্ঞাপন, এফিলিয়েট
মার্কেটিং, ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল পণ্য বিক্রি, সার্ভিস প্রদান, সদস্যতা
প্রোগ্রাম, স্পন্সরশিপ এবং পার্টনারশিপ, ডোনেশন, এবং ইভেন্ট আয়োজন। সঠিকভাবে
এই উপায়গুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্লগ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় করতে
পারবেন।
ব্লগ সাইট থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়
ব্লগ সাইট থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করার কয়েকটি পদ্ধতি হলোঃ
- গুগল অ্যাডসেন্সঃ আপনার ব্লগে গুগল অ্যাডসেন্স এর বিজ্ঞাপন স্থাপন করুন। পাঠকরা যখন এই বিজ্ঞাপনগুলিতে ক্লিক করবেন বা দেখবেন, তখন আপনি আয় করবেন।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ পণ্য বা সেবার অ্যাফিলিয়েট লিংক আপনার ব্লগে শেয়ার করুন। পাঠকরা যদি এই লিংকগুলির মাধ্যমে কিছু কিনে থাকেন, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।
- স্পনসরশিপঃ ব্র্যান্ড বা কোম্পানির সাথে চুক্তি করে তাদের পণ্য বা সেবা আপনার ব্লগে প্রচার করুন। এর জন্য আপনি স্পনসরশিপ ফি পেতে পারেন।
- ডিরেক্ট বিজ্ঞাপনঃ বিজ্ঞাপনদাতাদের সাথে সরাসরি চুক্তি করে তাদের বিজ্ঞাপন আপনার ব্লগে দেখান। এতে আপনি বিজ্ঞাপনের জন্য সরাসরি পেমেন্ট পাবেন।
- পেইড রিভিউঃ বিভিন্ন পণ্য বা সেবার রিভিউ লিখে প্রকাশ করুন এবং এর জন্য পেমেন্ট গ্রহণ করুন।
এই পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্লগ সাইট থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে
সুন্দর একটি আয় অর্জন করতে পারেন। তবে, মনে রাখবেন যে আয়ের পরিমাণ আপনার
ব্লগের ট্রাফিক এবং পাঠকের সংখ্যা উপর নির্ভর করবে। তাই, আপনার ব্লগের মান এবং
পাঠকের সাথে সংযোগ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
ব্লগ সাইড থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে মাধ্যমে আয়
ব্লগ সাইট থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করা একটি জনপ্রিয় এবং
কার্যকরী উপায়। এখানে কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন
তার বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হলোঃ
১. এফিলিয়েট প্রোগ্রাম নির্বাচন
- এফিলিয়েট নেটওয়ার্কঃ জনপ্রিয় এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক যেমন Amazon Associates, ShareASale, Commission Junction (CJ), Rakuten Marketing, এবং ClickBank এ যোগদান করুন।
- স্বতন্ত্র এফিলিয়েট প্রোগ্রামঃ বিভিন্ন কোম্পানির নিজস্ব এফিলিয়েট প্রোগ্রামও থাকে। আপনার ব্লগের বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রোগ্রাম খুঁজে বের করুন।
২. পণ্যের রিভিউ এবং রিকমেন্ডেশন
- রিভিউ পোস্টঃ যে পণ্য বা পরিষেবার এফিলিয়েট লিঙ্ক ব্যবহার করছেন, সেটির বিস্তারিত রিভিউ লিখুন।
- রিকমেন্ডেশন পোস্টঃ আপনার পাঠকদের জন্য সেরা প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের তালিকা তৈরি করুন এবং প্রতিটি আইটেমের জন্য এফিলিয়েট লিঙ্ক সংযুক্ত করুন।
৩. কন্টেন্টের মধ্যে এফিলিয়েট লিঙ্ক সংযোজন
- ব্লগ পোস্টঃ আপনার ব্লগ পোস্টের বিভিন্ন স্থানে প্রাসঙ্গিক এফিলিয়েট লিঙ্ক সংযুক্ত করুন।
- ব্যানার অ্যাডঃ সাইডবার, হেডার বা ফুটারে এফিলিয়েট ব্যানার অ্যাড যোগ করুন।
৪. এসইও (SEO) অপটিমাইজেশন
- কীওয়ার্ড গবেষণাঃ সার্চ ইঞ্জিনে উচ্চ র্যাংক পাওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড গবেষণা করুন এবং ব্যবহার করুন।
- অন-পেজ SEOঃ ব্লগ পোস্টের শিরোনাম, মেটা ডেসক্রিপশন, হেডিং, এবং কন্টেন্টে কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
- ব্যাকলিংক তৈরিঃ আপনার ব্লগ পোস্টের জন্য অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক সংগ্রহ করুন।
৫. সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণা
- সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিংঃ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট ইত্যাদিতে আপনার ব্লগ পোস্ট শেয়ার করুন।
- সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডসঃ প্রয়োজন অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডস চালিয়ে ট্রাফিক বৃদ্ধি করুন।
৬. ইমেইল মার্কেটিং
- ইমেইল লিস্ট তৈরিঃ পাঠকদের ইমেইল সাবস্ক্রিপশন অফার করুন এবং ইমেইল লিস্ট তৈরি করুন।
- নিউজলেটারঃ নিয়মিত ইমেইল নিউজলেটার পাঠান এবং প্রাসঙ্গিক এফিলিয়েট লিঙ্ক সংযুক্ত করুন।
৭. পাঠকদের সাথে বিশ্বাস স্থাপন
- স্বচ্ছতাঃ পাঠকদের জানিয়ে দিন যে আপনি এফিলিয়েট লিঙ্ক ব্যবহার করছেন এবং আপনি কমিশন পাবেন।
- মানসম্পন্ন কন্টেন্টঃ পাঠকদের জন্য মূল্যবান এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট প্রদান করুন যাতে তারা আপনার পরামর্শে বিশ্বাস করতে পারে।
৮. এফিলিয়েট লিঙ্কের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ
- ট্র্যাকিং টুলসঃ Google Analytics এবং অন্যান্য ট্র্যাকিং টুল ব্যবহার করে আপনার এফিলিয়েট লিঙ্কের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করুন।
- উন্নয়নের সুযোগঃ কোন লিঙ্কগুলি সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করছে এবং কোনগুলি নয় তা বিশ্লেষণ করে আপনার কৌশল উন্নত করুন।
সারসংক্ষেপ
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ব্লগ সাইট থেকে আয় করার জন্য এফিলিয়েট
প্রোগ্রাম নির্বাচন, পণ্যের রিভিউ এবং রিকমেন্ডেশন, কন্টেন্টের মধ্যে এফিলিয়েট
লিঙ্ক সংযোজন, SEO অপটিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণা, ইমেইল মার্কেটিং,
পাঠকদের সাথে বিশ্বাস স্থাপন এবং এফিলিয়েট লিঙ্কের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করতে
হবে। সঠিক পরিকল্পনা এবং কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের
মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য আয় করতে পারেন।
ব্লগ সাইডে সরাসরি ডিজিটাল প্রোডাক্টের মাধ্যমে আয়
ব্লগ সাইটে সরাসরি ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয় করা একটি অত্যন্ত লাভজনক
উপায় হতে পারে। এখানে কিভাবে ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন এবং এর
মাধ্যমে আয় করতে পারেন তার বিস্তারিত প্রক্রিয়া দেওয়া হলোঃ
ডিজিটাল প্রোডাক্টের ধরন নির্বাচন
- ই-বুকঃ একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ই-বুক লিখুন এবং এটি আপনার ব্লগে বিক্রি করুন।
- অনলাইন কোর্সঃ আপনার দক্ষতা এবং জ্ঞান নিয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করুন এবং বিক্রি করুন।
- প্রিন্টেবলস এবং টেমপ্লেটঃ প্রিন্টেবল প্ল্যানার, চেকলিস্ট, ডিজাইন টেমপ্লেট ইত্যাদি তৈরি করুন।
- সফটওয়্যার এবং অ্যাপঃ যদি আপনি সফটওয়্যার ডেভেলপার হন, তবে বিভিন্ন সফটওয়্যার বা অ্যাপ তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।=
- স্টক ফটো এবং ভিডিওঃ ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফি করতে পারলে স্টক ফটো এবং ভিডিও বিক্রি করুন।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট তৈরি
- গুণগত মানঃ আপনার ডিজিটাল প্রোডাক্টের মান উচ্চ রাখতে হবে যাতে এটি ক্রেতাদের জন্য উপযোগী হয়।
- ব্যবহারকারী বান্ধবঃ প্রোডাক্টটি ব্যবহার করা সহজ এবং সরল হতে হবে যাতে ক্রেতারা সহজে বুঝতে পারে এবং ব্যবহার করতে পারে।
ব্লগে প্রোডাক্ট পৃষ্ঠা তৈরি
- প্রোডাক্ট পৃষ্ঠাঃ আপনার ব্লগে প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য একটি আলাদা প্রোডাক্ট পৃষ্ঠা তৈরি করুন যেখানে প্রোডাক্টের বিস্তারিত বিবরণ থাকবে।
- প্রিভিউ এবং ডেমোঃ প্রোডাক্টের কিছু অংশ প্রিভিউ বা ডেমো হিসাবে দিন যাতে ক্রেতারা প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারনা পেতে পারে।
পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেশন
- পেমেন্ট গেটওয়েঃ PayPal, Stripe ইত্যাদি পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেট করুন যাতে ক্রেতারা সহজেই পেমেন্ট করতে পারে।
- ডিজিটাল ডেলিভারিঃ প্রোডাক্ট ক্রয় করার পর ক্রেতাদের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করার ব্যবস্থা করুন।
প্রমোশন এবং মার্কেটিং
- SEOঃ আপনার প্রোডাক্ট পৃষ্ঠা SEO ফ্রেন্ডলি করুন যাতে সার্চ ইঞ্জিনে উচ্চ র্যাংক পায়।
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে প্রোডাক্টের প্রচার করুন।
- ইমেইল মার্কেটিংঃ আপনার সাবস্ক্রাইবারদের কাছে প্রোডাক্টের সম্পর্কে ইমেইল পাঠান।
- অফার এবং ডিসকাউন্টঃ বিভিন্ন সময়ে অফার এবং ডিসকাউন্ট দিন যা ক্রেতাদের আকর্ষণ করবে।
ক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি
- গ্রাহক সেবাঃ ক্রেতাদের প্রশ্ন এবং সমস্যা দ্রুত সমাধান করুন।
- ফিডব্যাকঃ ক্রেতাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক সংগ্রহ করুন এবং প্রোডাক্টের গুণগত মান উন্নত করুন।
- লয়ালটি প্রোগ্রামঃ লয়াল ক্রেতাদের জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম বা ডিসকাউন্ট অফার করুন।
প্রোডাক্ট আপডেট এবং রক্ষণাবেক্ষণ
- নিয়মিত আপডেটঃ প্রোডাক্টে নিয়মিত আপডেট যোগ করুন যাতে এটি সর্বদা আধুনিক এবং কার্যকর থাকে।
- রক্ষণাবেক্ষণঃ প্রোডাক্টের কার্যকারিতা বজায় রাখুন এবং কোন সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান করুন।
সারসংক্ষেপ
ব্লগ সাইটে ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য প্রথমে প্রোডাক্টের ধরন
নির্বাচন করতে হবে, প্রোডাক্ট তৈরি করতে হবে, প্রোডাক্ট পৃষ্ঠা তৈরি করতে হবে,
পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেট করতে হবে, প্রমোশন এবং মার্কেটিং করতে হবে,
ক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে এবং প্রোডাক্ট আপডেট এবং রক্ষণাবেক্ষণ
করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ
থেকে উল্লেখযোগ্য আয় করতে পারবেন।
ব্লগ সাইটে সাবস্ক্রিপশন থেকে আয়
ব্লগ সাইটে সাবস্ক্রিপশন মডেলের মাধ্যমে আয় করার কিছু উপায় হলোঃ
প্রিমিয়াম সামগ্রীঃ পাঠকদের জন্য বিশেষ প্রিমিয়াম সামগ্রী তৈরি
করুন যা শুধুমাত্র সাবস্ক্রাইবাররা অ্যাক্সেস করতে পারবে।
মেম্বারশিপ প্রোগ্রামঃ একটি মেম্বারশিপ প্রোগ্রাম চালু করুন যেখানে
সাবস্ক্রাইবাররা মাসিক বা বার্ষিক ফি প্রদান করে বিশেষ সুবিধা পাবে।
ডোনেশন ও পাট্রনেজঃ পাঠকদের কাছে স্বেচ্ছায় অর্থ দানের জন্য
অনুরোধ করুন বা পাট্রনেজ সাইটের মাধ্যমে সাপোর্ট চান।
এক্সক্লুসিভ অফারঃ সাবস্ক্রাইবারদের জন্য বিশেষ ডিসকাউন্ট বা অফার
প্রদান করুন যা তারা অন্যথায় পাবে না।
ওয়েবিনার ও ওয়ার্কশপঃ সাবস্ক্রাইবারদের জন্য বিশেষ ওয়েবিনার বা
ওয়ার্কশপ আয়োজন করুন এবং এর জন্য ফি নির্ধারণ করুন।
এই পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্লগ সাইটে সাবস্ক্রিপশন মডেলের মাধ্যমে
একটি স্থায়ী এবং নিয়মিত আয়ের উৎস তৈরি করতে পারেন। তবে, পাঠকদের মানসম্মত
সামগ্রী প্রদান করা এবং তাদের সাবস্ক্রিপশনের মূল্য দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক এর মন্তব্য
পরিশেষে বলতে চাই, বর্তমানে ব্লগিংয়ের চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা বাড়ার প্রধান
কারণগুলির মধ্যে রয়েছে তথ্য এবং জ্ঞানের সহজলভ্যতা, ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং এবং
প্রভাব, সম্প্রদায় গঠন, আয়ের উৎস, শিক্ষামূলক এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট,
ব্যবসায়িক উন্নয়ন, ট্রাফিক বৃদ্ধি এবং সর্বজনীন এবং সহজলভ্যতা।
আরো পড়ুনঃ ১০০০ ভিউ এর জন্য ফেসবুক কত টাকা দেয়
ব্লগিংয়ের এই বিভিন্ন সুবিধা এবং সুযোগগুলির কারণে, এটি বর্তমান সময়ে অত্যন্ত
জনপ্রিয় এবং আয়ের একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি
আপনাদের ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? ব্লগ তৈরির নিয়ম সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা
দিয়েছে। এটি আপনাদের একটি নতুন ব্লগ তৈরিতে সহায়তা করবে। ধন্যবাদ!
চাঁপাই আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url