জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী জেনে নিন বিস্তারিত

বিশ্বের প্রতিটি মানুষ চাই সফল হতে। হয়তো একেক জনের চাওয়াটা একেক রকম। আপনি কি জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী এই সম্পর্কে জানতে চাইছেন? আপনার জীবনে সফল হতে হলে আপনাকে এমনভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে যে সফলতা নিজেই আপনাকে ধরা দিবে। মানুষ কখনো একদিনের সফল হতে পারেনা। এর জন্য চাই ধৈর্য্য এবং কিছু মূলমন্ত্র। আমাদের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী এ সম্পর্কে বিস্তারিত।
জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী জেনে নিন বিস্তারিত
মানুষ জন্ম থেকে সবকিছু শিখে আসে না। সময় এবং পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়। কোন কাজ আপনি একবার শুরু করেছেন এবং সাথে সাথে সফলতা পাবেন এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন।

পেজ সূচিপত্রঃ জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী

জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী

জীবনে সফল হওয়া খুব সহজ কাজ নয় এটি অনেক কঠিন একটি কাজ। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই জীবনের সফল হওয়া খুব কঠিন একটি কাজ। একটি পুরুষের সফল হতে যে সময় লাগে একটি নারীর সফল হতে তার চাইতে একটু সময় বেশি লাগে।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মূলত জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী এসব সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। জীবনে চলার পথে বেশ কয়েকটি মন্ত্র অনুসরণ করলে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যেতে পারে। নিচে জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

নিজেকে গুরুত্ব দিনঃ বাস্তব জীবনে যে ক্ষেত্রে সফল হতে চান না কেন আপনাকে সবার প্রথমে নিজেকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিজেকে নিজে যদি গুরুত্ব না দেওয়া হয় তাহলে আপনি আপনার জীবনের সফলতা খুঁজে পাবেন না।
আপনি সর্বদা নিজের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যর দিকে খেয়াল করবেন। নিজের গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি আপনার আত্মীয়-স্বজন খুব ঘনিষ্ঠ মানুষ এদের খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করবেন। কারণ কখন কোন সময় আপনার কাকে প্রয়োজন হবে আপনি তা নিজেও জানেন না। তাই কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না।

সামনে এগিয়ে যানঃ মনোবিজ্ঞানী এডিথ এজের মতে, তিনি বলেন জীবনের সফলতা আনতে হলে আপনার নিজেকে পর্বতরোহি হিসেবে মনে করতে হবে। কারণ, পর্বতারোহী ব্যক্তি যখন উপরে উঠতে থাকে তখন তিনি অনেক সময় পিছলে পড়ে যান। কয়েক ধাপ উপরে উঠে কয়েক ধাপ আবার নিচে নেমে যান।

কিন্তু তাই বলে সে ওপরে ওঠা থামিয়ে দেয় না। ঠিক তেমনি ভাবে অনেক সময় আপনি হয়তো পিছলে পড়ে যাবেন কিন্তু তাই বলে থেমে যাওয়া যাবে না। কারণ থেমে গেলে আপনার জীবনের সফলতা সেখানেই হয়তো শেষ হয়ে যাবে।

অর্থাৎ ওপরে উঠতে গেলে আপনি অনেক সময় দেখবেন নিচে নেমে যাচ্ছেন। হয়তো আপনার মনে হবে এখানে সব শেষ হয়ে গেল বলে থেমে যাবেন। কিন্তু না আপনার জীবনে আপনি যখন উপরে উঠবেন তখন অনেক ঝড়-ঝাপটা আসবে আর এ সমস্ত কিছু মোকাবেলা করেই আপনাকে উপরে উঠতে হবে। হয়তো এভাবে আপনার জীবনের সফলতা আসবে একদিন।

অন্যদের ভাবনাকে গুরুত্ব না দেওয়াঃ অন্যদের ভাবনাকে আপনি কখনোই পাত্তা দিবেন না। হয়তো আপনি কোন কাজ করছেন তখন আপনার মাথায় চিন্তা আসলো যে আমার এ বিষয় নিয়ে অন্য কেউ কি ভাবছে বা তাদের ধারণাটা কি বা হয়তো তারা পিছনে অনেক কথা বলছে এগুলোকে আপনি গুরুত্ব দিয়ে ফেলছেন এটি আপনার জন্য ক্ষতিকর। কারণ পিছে মানুষ অনেক কথা বলবে এগুলোকে গুরুত্ব দিলে আপনি সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন না।

আপনি নিজে কতটুকু পারবেন বা আপনার সম্পর্কে আপনার যে ধারণা অন্য মানুষ আপনার সম্পর্কে সে ধারণা নাও করতে পারে। যেমন ধরেন আপনার নিজেকে বা আপনার নিজের চেহারাকে আপনি নিজে যতটা মূল্যায়ন করেন বা ভালোবাসেন অন্যজন ঠিক ততটাই আপনার চেহারাকে বা আপনাকে এত পরিমাণে ভালবাসবেনা তাই বলে কি আপনি আপনার নিজের যত্ন নেওয়া ভুলে যাবেন।

ঠিক এমনিভাবে আপনি যখন কোন কাজ করার চেষ্টা করবেন তখন এটা অনেকের কাজ হয়েই অপছন্দের হবে তাই বলে সেটি করা বন্ধ করে দিবেন না। লেগে থাকুন ইনশাল্লাহ একদিন সফলতা পাবেন।

দৃষ্টিভঙ্গিঃ দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে। কথাটি আসলেই অনেকটা সত্য। আমাদের জীবনে অনেক সময় ভালো এবং খারাপ দুইটাই আসে। যখন আমাদের ভালো সময় যায় তখন আমরা খুব আনন্দিত থাকি। কিন্তু যখন আমাদের খারাপ সময় আসে তখন আমরা ভাবি এখানে হয়তো আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল বা আমরা ডুবে গেছি। আর হয়তো নতুন করে কিছু হবে না বা পারব না। বিষয়টি এভাবে না ভেবে একটু অন্যভাবে ভাবুন।

এভাবে ভাবুন যে, এটি আপনার জীবনে একটি নতুন শিক্ষা বা হয়তো আপনার জন্য নতুন কোন কিছু অপেক্ষা করছে বা এর চাইতে বেশি কিছু পেতে পারেন বলেই এ সময়টা আপনার সামনে এ মুহূর্তে এসেছে। খারাপ সময়টাকে একটু ভালোভাবে ইতিবাচক চিন্তা করে ভাববেন দেখবেন সময়টা আপনার কাছে ভালো যাচ্ছে এবং আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে। মনে রাখবেন সফলতা কখনো একদিনে আসে না।

বুদ্ধি কাজে লাগানঃ মনোবিজ্ঞানদের মতে, যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনি আপনার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। কখন কোন সময় আমাদের জীবনে কি ঘটতে পারে এটা কিন্তু কেউ আমরা জানিনা। কিন্তু আমাদের মাথার ভিতরে যে জ্ঞান বা বুদ্ধি আছে সেটা কিন্তু অন্য কেউ জানে না। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনি আপনার উপস্থিত বুদ্ধিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

মনোবিজ্ঞানী এডিট এজ বলেনম, তিনি জানান "আমি যখন প্রথমে আমেরিকায় পা দেই তখন আমি কিন্তু ইংরেজির কিছুই জানতাম না কিন্তু তারপর তিনি একটি ওই দেশের কোন নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেছে" তিনি কিন্তু হেরে যাননি তিনি তার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়েছেন মাথা খাটিয়েছেন এবং সফল হয়েছেন।

নিজেকে বিশ্রাম দিনঃ সফলতা পেতে হলে আপনাকে একই গতিতে চলতে হবে বিষয়টা কিন্তু একেবারে এমনটা না। অনেক সময় নিজের ভিতরে কিছু শূন্যতা পূরণের জন্য কিছু সময় দরকার হয়। প্রতিদিন একটি সময় বের করুন সে সময়টিতে আপনি ভাববেন যে আপনি সারাদিন কি কি কাজ করেছেন এবং কোন কাজগুলোতে আপনার ভুল হয়েছে সেগুলো শুধরানোর চেষ্টা করবেন।

এ সময়টা শুধু নিজেকে সময় দিন এ সময় যেকোন ইলেকট্রিক যন্ত্র থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।

ইতিবাচক মানুষের সংস্পর্শে থাকুনঃ চেষ্টা করবেন সবসময় ইতিবাচক মানুষদের সংস্পর্শে থাকার। তাহলে দেখবেন অনেক সময় নিজের ব্যর্থতা বা সক্ষমতা নিয়ে আপনি প্রশ্ন উঠাবেন না। অনেক মানুষ আছে যারা সব সময় নিজেদের জীবন নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ডিপ্রেশানে দিন পার করে। কি করবো কি হবে কেন এটি হল এগুলো ভাবতে ভাবতে দিন পার করে দেয় এ ধরনের মানুষগুলো থেকে দূরে থাকুন।

যেসব ব্যক্তিরা সব পরিস্থিতিতে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করে তাদের পাশে থাকলে দেখবেন আপনার কনফিডেন্স লেভেল অনেক হাই হয়ে যাচ্ছে। কারন ইতিবাচক ব্যক্তিরা যেকোনো পরিস্থিতিতে তার মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকে। যেটি "পারব" বলে সেটি করার চেষ্টা করে।

কাজঃ একটি কাজকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকবেন না। একের অধিক কাজ করার চেষ্টা করুন দেখবেন কোনটাতে না কোনটাতে আপনি সফল হবেন।

প্রেমঃ কে প্রেম করলো, কে কাকে ভালোবাসলো এবং আপনাকে কেউ সম্মান করলো কিনা এগুলো কখনো মাথায় আনবেন না। আপনি নিজেকে সব সময় সময় এবং মূল্য দিবেন।

তুলনাঃ আপনি কখনো নিজেকে অন্য কারো সাথে তুলনা করবেন না। নিজের কাজকে অন্য কারো কাজের সামনে ছোট করবেন না। আপনি যেটা করবেন সেটা কি আপনি সম্মান করবেন দেখবেন আপনার কাজ করার ইচ্ছা বেড়ে যাবে অনেক গুণ।

নেশাঃ নেশা জাতীয় দ্রুবকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

স্বপ্নঃ অবশ্যই আপনি স্বপ্ন দেখার সময় সবচেয়ে বড় স্বপ্নটা দেখার চেষ্টা করুন। স্বপ্নটা এমন ভাবে দেখুন যে সে স্বপ্নটা আপনাকে সফল হওয়ার জন্য ঘুমাতে দিচ্ছে না। দেখবেন সফলতা আসবে।

শিক্ষাঃ আপনার সফলতা হতে সাহায্য করে ধর্মীয় শিক্ষা, প্রযুক্তিগত শিক্ষা, এবং সৃজনশীল শিক্ষা এগুলোকে সম্মান করুন।

সময়ঃ সময়ের কাজ সময় করার চেষ্টা করুন। সময়কে মূল্য দিন। যতটা সম্ভব সময় বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করবেন।

অতীতের ভুলঃ সবসময় কাজের ক্ষেত্রে আপনি অতীতের ভুলগুলোকে মনে করবেন। অন্য ব্যক্তি কেন ব্যর্থ হচ্ছে সেদিকে একটু লক্ষ্য রাখবেন এবং নিজের কাজকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিবেন।

চ্যালেঞ্জঃ আপনার কাজের প্রতি গভীর বিশ্বাস রেখে আপনি যেকোন কাজে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মত মন মানসিকতা তৈরি করুন।

একজন মানুষ সফল হওয়ার জন্য জীবনে অনেক বাধা বিপত্তি সম্মুখীন হবে। তাই বলে কখনো থেমে যাবেন না। সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই ধৈর্য ধরুন। আপনার ধৈর্য এবং কাজের উপরেই দেখবেন একদিন আল্লাহ আপনাকে সফলতা দেবে। আপনি যদি হতাশ হয়ে পড়েন তাহলে ওপরে আমাদের জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পড়ুন এবং নিজের মধ্যে অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। আশা করি সফল হবেন।

জীবনে সফল হওয়ার উপায় উক্তি

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে জীবনে সফল হওয়ার উপায় উক্তি সম্পর্কে বেশ কিছু আলোচনা করা হয়েছে। নিচে নিচে উক্তি গুলো আলোচনা করা হলো
  • যে ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে সীমাহীন কাজ করার উৎসাহ , দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা ধৈর্য এবং গুণ এবং উপস্থিত বুদ্ধি সে ব্যক্তির সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
  • একজন সফল এবং অসফল ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্যটা হল ইচ্ছা শক্তির। যে ব্যক্তি সফল হয়েছে তার কাজ করার ইচ্ছা ছিল প্রবল।
  • যে ব্যক্তির কাজের ওপর রয়েছে অনেক মনোযোগী সেই কিন্তু হতে পারে একজন সফল ব্যক্তি।
  • সাফল্য পেতে হলে আপনাকে আগে একটি লক্ষ্য স্থির করতে হবে এবং সেই লক্ষ্য কে আপনার জীবনের একটি অংশ বানিয়ে ফেলুন। শরীর থেকে পা পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় আপনার সেই লক্ষ্যকে ছড়িয়ে দিন দেখবেন সফলতা আসবে।
  • যে কাজ করতে ভালোবাসে সেটা কি লক্ষ বানিয়ে ফেলুন। দেখবেন সাফল্য একদিন ধরা দিবে।
  • নিজের চেষ্টা এবং সর্বস্ব পরিশ্রম দিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টা করুন।
  • সফল ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য হলো যতক্ষণ না সফলতা পাচ্ছে ততক্ষণ কাজ করে যাবে এবং তার মধ্যে ভালো লাগা কাজ না করল সে কিন্তু কাজ করে যাবে। অসফল ব্যক্তিদের দেখা যাই ভালো লাগলে কাজ করল ভালো না লাগলে কাজ করা বন্ধ করে দিল।
  • আত্মবিশ্বাস এবং জেদ এই দুইটা সফল হওয়ার জন্য খুব বেশি প্রয়োজন।
  • সমালোচনা হতে পারে তোমার সাফল্যের চাবিকাঠি। কারণ কেউ যদি তোমার সমালোচনা না করে তাহলে তোমার সফলতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
  • যে কাজটি তুমি করতে চাও সে কাজটি খুব ভালোভাবে করলে সফলতা আসবে।
  • জীবনে কঠিন সময় আসবে কারণ প্রতিটি কঠিন সময় তোমাকে নতুন কিছু শিক্ষা দিবে।
  • সাফল্য ধরতে হলে তোমাকে সাফল্যের আগুন নিজ হাতে জ্বালাতে হবে।
  • যে ব্যক্তি তার সবচেয়ে ভালো লাগার কাজটি করে দেখা যায় সে ব্যক্তি সে কাজের উপর সবচেয়ে বেশি সফল হয়।
  • সবসময় সত্যের পথে সফল হওয়ার চেষ্টা করবে। অসত্যর পথেপথে সফল হলেই সেটি বেশি স্থায়ী হয় না।
  • রাতারাতি সাফল্য হওয়ার চেষ্টা কখনো করো না। মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে দেখবে সফলতা আসবে।

জীবনে বড় হতে হলে কি করতে হবে

  • জীবনে বড় হতে হলে কি করতে হবে সে সম্পর্কে নিচে কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো।
  • আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসও হতে হবে।
  • নামাজ পড়তে হবে এবং বিনয় অবলম্বন করতে হবে।
  • অনর্থক অর্থাৎ যে ধরনের কার্যকলাপ গুলোর প্রয়োজন নেই সেগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • যাকাত দেওয়ার সামর্থ্য থাকলে যাকাত দিতে হবে।
  • নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে হবে।
  • আমানতের খেয়ানত করা যাবে না। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।
  • ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার উপায়

পরিশ্রমী হওয়ার উপায়

"পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি" অর্থাৎ আপনি আপনার সাফল্য নিয়ে আসতে পারেন। একজন মানুষ চাইলে কিন্তু সে অধিক মেধাবী হতে পারে না। কিন্তু সে চাইলে অতিরিক্ত পরিশ্রমী হতে পারে। এবং এ পরিশ্রমই হবে আপনার সাফল্যের হাতিয়ার। আপনি পরিশ্রম দিয়ে একজন মেধাবী ব্যক্তিকে পিছনে ফেলতে পারেন অনায়াসে। পরিশ্রম বলতে শুধু শারীরিক শক্তিকে বুঝাই না।
আপনার শারীরিক শক্তি দিয়ে কিন্তু আপনি কঠোর পরিশ্রমী হতে পারবেন না। শারীরিক এবং মানসিক শক্তির মাধ্যমে আপনি একজন পরিশ্রমী ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারেন। আমাদের এই আর্টিকেলে পরিশ্রমী হওয়ার উপায় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।

কাজ ভাগ করাঃ কাজ ভাগ করা বলতে আপনি যখন একটি বড় কাজ করছেন তখন আপনার মস্তিষ্ক অনেকটা চাপ অনুভব করে। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ অনুভূতি হলে এটি আপনাকে কঠিন কাজ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। বড় কাজ দেখলে আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে ইঙ্গিত করবে যে আপনার এ কাজটি এই মুহূর্তে করা সম্ভব হবে না এখন আপনার কিছুটা বিশ্রামের প্রয়োজন। অর্থাৎ অনেক সময় দেখা যায় না চাইতে কিছুটা যেন বিশ্রাম নিতে মন চায়।

তাই আপনার এ বড় কাজ কে ছোট ছোট কাজে বিভক্ত করে ফেলুন। এবার ছোট কাজগুলোকে আপনি পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে করে ফেলুন। এভাবে দেখবেন আপনার পুরো কাজ শেষ করতে সময় কম লাগছে এবং আপনি কাজে আনন্দ পাচ্ছেন। এর ফলে আপনি দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারবেন। এবং এভাবে আপনি অনেক পরিশ্রমী হয়ে উঠবেন।

একটানা কাজ না করাঃ আমরা যখন একটানা কাজ করি তখন অনেক সময় আমাদের একঘেয়েমি লেগে যায়। একটানা কোন কাজের প্রতি মনোযোগ দিলে দেখা যায় সে মনোযোগটা খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ আমাদের মস্তিষ্ক একঘেয়েমি কোন কিছুই সহ্য করতে পারে না। অর্থাৎ কিছুটা সময় পরপর আপনার কাজের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন।

নিয়ম মেনে খাবার খাওয়াঃ আপনার শরীরকে সবসময় সুস্থ এবং চাঙ্গা রাখতে হলে আপনাকে নিয়ম মেনে খাবার খেতে হবে। তাহলে আপনি অনেক বেশি পরিশ্রম করতে পারবেন। বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে খুব স্বাদ পাওয়া যায়। কিন্তু এই খাবার খাওয়ার মাধ্যমে অলসতা বেড়ে যায়। যেমন দেখা যায় পোলাও, মাংস ও খিচুড়ি ইত্যাদি।

এ খাবারগুলোতে যথেষ্ট স্বাদ থাকলেও এগুলো আমাদের শরীরের চর্বি জমাই এবং অনেক সময় অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায়। যার ফলে খাবারগুলো খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের কাজ করার প্রতি অনিহা চলে আসে। নিজের অজান্তে শরীর তখন বিশ্রাম নিতে শুরু করে। যার ফলে আর কঠিন পরিশ্রম করা হয় না।

যথেষ্ট ঘুম এবং বিশ্রামঃ অনেক ব্যক্তিকে দেখা যায় তারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করার জন্য নিজের ঘুম এবং বিশ্রাম কে একেবারে বিসর্জন দিয়ে ফেলে। কিন্তু আপনি কি জানেন, আপনি যদি দীর্ঘ সময় কম ঘুম বা কম বিশ্রামে অভ্যস্ত হয়ে যান তাহলে এটি আপনার পরিশ্রম করার ক্ষমতাকে আস্তে আস্তে কমিয়ে দেয়। তাই প্রতিদিন আপনাকে বিশ্রাম নিতে হবে।

একজন মানুষের গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করবেন এবং সকল সকল ঘুম থেকে উঠবেন। দেখবেন আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি বেড়ে গেছে। এবং আপনি যথেষ্ট পরিশ্রম করতে পারবেন।

শেষ কথাঃ জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী

প্রিয় পাঠক আজকে আমাদের আর্টিকেলটি ছিল মূলত, জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কী এ সম্পর্কে।সফলতা অনেক কঠিন একটি কাজ হলেও আপনার পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনি এটিকে সহজ করে নিতে পারেন। সফল হতে হলে আপনার লক্ষ্য স্থির করতে হবে। এবং সে লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করলে দেখবেন এক দিন সফলতা পাবেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

চাঁপাই আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url