কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত

অনেকেই কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাই? বাদাম এমন একটি খাদ্য যার পূষ্টিগূনের কোন অভাব নেই। বাদাম সাধারণত মানুষের শরীরে ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টে এর মতো উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে। এসব মানুষের শরীরে ও মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য বিষদ ভূমিকা পালন করে। তবে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে।কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আপনার অনেকেই বাদাম খেতে পছন্দ করেন। প্রতিদিন কাঁচা বাদাম খেলে মানুষের যে রোগ সারে তা আপনাদের খুব একটা না জানা নই। তাই কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতাঃ কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেসম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-

ক্লান্তি দূর করে: শক্তির ভালো উৎস হলো বাদাম। বাদাম খাওয়ার ফলে শরীরে এনার্জি জোগায়। নিয়মিত এই বাদাম খেলে একসময় শরীরের ক্লান্তি থাকেনা।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: বাদামে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক কম থাকে এবং অধিক মাত্রায় পাওয়া যায় পটাশিয়াম। যা আপনার শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পটাসিয়ামের পরিমাণ কম হলে দেহে রক্ত বেড়ে যায় তখন রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই আপনার জন্য নিয়মিত কাঁচা বাদাম খাওয়া ভালো।
স্বাস্থ্যকর হৃদয়: যে সকল উপাদান হার্টের পক্ষে খুব ভালো তা পাওয়া যায় বাদাম থেকে। এছাড়াও দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম, তামা এবং লোহার মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

মেজাজ ভাল রাখে: আপানকে ক্যলরির জন্য অতিরিক্ত খাবার খেতে হবেনা যদি আপানি নিয়মিত অন্তত একবার কয়েকটি বাদাম খান। বাদাম খেলে মেজাজ ঠান্ডা ও সুস্থ থাকে। তাই বাদাম মনের চাপ দূর করে মনকে করে রিফ্রেশ।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতাঃ কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-

ওজন: অতিরিক্ত বাদাম খেলে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে যেহেতু এটি একটি শর্করা জাতীয় খাবার। শর্করা আমাদের দেহের জন্য খুবিই উপকারী একটি উপাদান কিন্তুি অতিরিক্ত কোনকিছুই ভালো নয়। তাই আমরা নিয়মিত বাদাম খাবো কিন্ত অতিরিক্তি খাবনা।

গ্যাস্ট্রিক: আপনি প্রতিদিন নিয়মিত বাদাম খান এটি ঠিক। কিন্তু প্রতিদিন 200 গ্রাম বা তার থেকে বেশি বাদাম খেলে আপনার পেট এবং বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে।

এলার্জিঃ যারা এলার্জির রোগী আছেন তারা অতিরিক্ত বাদাম কখনই খাবেন না। কারণ এতে এলার্জি বাড়িয়ে দেয়।

ঔষূধ এর কাজ না করা: অতিরিক্তি পরিমাণ কাঁচা বাদাম খেলে ঔষূধের গুনাগুন ক্ষমতা কমিয়ে দেই। যার ফলে কোন অসুখ সহজে ঠিক হয়না।

বাদাম আমাদের অনেকেরই খুব পছন্দের একটি খাবার। কাঁচা বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে আমরা অনেক উপকৃত হয়ে থাকি কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এটি অনেক সময় আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আপনি যদি পরিমাণ মতো কাঁচা বাদাম খান তাহলে আপনি কাঁচা বাদাম থেকে উপকারটাই বেশি পাবেন।

সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

সুপ্রিয় পাঠকমন্ডলি, আপনারা এতক্ষণ কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জনলেন। এখন বিস্তারিত আলোচনা করব সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: জ্ঞানীদের মতে, যারা সকালে নিয়মিত কাঁচা বাদাম খান তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে। নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেলে শরীরের হাড় মজবুত হয়। তাছাড়া মস্তিস্কের পাওয়ার বৃদ্ধি ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও দূর করে। এতে চর্বি, কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিনের মতো বিভিন্ন উপাদান রয়েছে।
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ: সকালে নিয়মিত চীনা বাদাম খেলে শরীরে আয়রনের অভাব দূর হয়। শরীরে রক্তের অভাব দূর করে এবং রক্ত চলাচল উন্নত করে। এটি রক্তশূন্যতা কমায়। নিয়মিত কাঁচা বাদাম খাওয়ার ফলে হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়। তাছাড়া চিনাবাদামে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, আয়রন, কপার ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি: আপনার শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করার সবথেকে ভালো উপায় হচ্ছে প্রতিদিন সকালে চিনা বাদাম খাওয়া। এর ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তাই বলা যায় যে, সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার নিয়ম

সারাদিনে তিন বেলা খাবারের মধ্যে আপনার মুখকে ব্যস্ত রাখার জন্য বাদাম একটি দুর্দান্ত বিকল্প। বাদাম, কাঁচা হোক বা শুকনো এতে হার্ট এর জন্য খুবই উপকারী চর্বি থাকে। সকালে খালি পেটে কাচা বা শুকনো বাদাম খাওয়া খুব ভালো। কিন্তু শুধু বাদাম খাওয়া ভালো তার মানে এই নয় যে আপনার এক মুঠো করে খাওয়া উচিত।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং সকালে ওঠে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানার সাথে সাথে আশা করি কাঁচা বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও জেনে গেছেন।

কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে বাদাম খেলে বদহজমের মত সমস্যা সৃষ্টি হয়। সে জন্য কিছু পুষ্টি বিজ্ঞানীরা বাদাম ভিজিয়ে নরম করে খাওয়ার পরামর্শ দেন। কেন বাদাম ভিজিয়ে খেতে বলেন তারা? ভিজিয়ে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পের্কে বিস্তারিত জানাবো সাথেই থাকুন। বাদামে পাওয়া যায় ফেনোলিক যৌগ ট্যানিন। এই উপাদানের কারণে অনেকের হজম শক্তি কমে যায়। যার ফলে আমাদের বদহজম হতে পারে। 
যাদের হজমের সমস্যা থাকে তারা কাঁচা বাদাম বা শুকনো বাদাম খেলে গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যেতে পারে। কারণ এই ট্যানিন শরীরে প্রোটিন পরিপাকেও ঝামেলা তৈরী করে। বাদামে ট্যানিনের পরিমাণ কমে যায় যদি আগে থেকে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যায়।বাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফাইটিক অ্যাসিড খাদ্যনালীতে দ্রবীভূত হয় না কারণ শরীরে আয়রন, জিঙ্কের সঙ্গে বিক্রিয়ায় লবন তৈরি করে,থাকে ।

এই ফাইটিক অ্যাসিড শরীরে পেপসিন, ট্রিপসিন উৎসেচকের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন হজমেও বাধা দেয়। তাৈই পানিতে ভিজিয়ে রাখলে বাদামের ফাইটিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায়। অর্থাৎ কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি।

চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রায় প্রত্যেকটি ধরনের বাদামের কাজ একই। এখন আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা প্রবন্থটিতে চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করব।

চিনা বাদামের উপকারিতাঃ

  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।
  • ক্ষুধাবোধ কমাতে সাহায্য করে।
  • হালকা খাবার হিসেবে বাদাম খাওয়া ভালো অভ্যাস।
  • বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে য ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • হার্টের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • পিত্তথলিতে পাথর হওয়া থেকে বাচায়।
  • বাদামের তেল মানবদেহের জয়েন্টের ব্যথা নির্মল করে
চিনা বাদামের অপকারিতা

  • অতিরিক্ত খেলে বিষাক্ততা বেড়ে যায়।
  • আয়রন ও জিংক শোষণে বাধা।
  • চিনা বাদামে যাদের এলার্জী আছে তাদের সব থেকে বেশি এলার্জী হয়।

কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা

কাজু বাদামের উপকারিতাঃ কাজু বাদামের অনেক গুণ রয়েছে। কাজু বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। নিচে কাজু বাদামের উপকারিতা আলোচনা করা হলো-

ক্যান্সার থেকে মুক্তি: কাজু নামের এক প্রকার বাদাম যা ক্যান্সার কোষগুলিকে বাড়তে দেয়না। কাজু বাদাম নিয়মিত খেলে ক্যান্সারের থেকে আপনাকে রক্ষা রাখে।

মস্তিষ্ক বা স্মিৃতিশক্তি শক্তিশালী করে: কাজু বাদামে এক প্রকার তেল থাকে যা ভিটামিন বি যুক্ত। আমাদের শরীরে বাদাম ই একমাত্র খাদ্য যা ভিটামিন বি সবথেকে বেশি যোগান দেয় । ভিটামিন বি- ই মস্তিস্কের স্মিৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে যা বাদাম থেকে বেশি পরিমানে পাওয়া যায়।

কলেস্টেরল কমায়: নিয়মিত বাদাম খাওয়া কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে দেইনা। বাদাম একটি উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাদ্য হওয়ায় দ্রুত হজম হয়। তাই যাদের কলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তাদের নিয়মিত বাদাম খাওয়া উচিত।

কাজু বাদামের অপকারিতাঃ আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা খুব ভালো ভাবে জানলাম এবং এখন আমরা জেনে যাব কাজু বাদামের অপকারিতা।

বেশি চিনেবাদাম খেলে আয়রন, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ এবং ক্যালসিয়ামের মতো অন্যান্য খনিজ শোষণে বাধা পড়ে। যাদের এলার্জি আছে তাদের নাক দিয়ে পানি পড়া, ত্বকের সম্স্য, বদ হজম হওয়া ইত্যাদি সমস্য হয়।

শেষ কথা: কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

বাদাম মোটামুটি অনেক প্রকারের হয়ে থাকে। তবে প্রত্যেকটি বাদাম এমন একটি খাদ্য যা নিয়মিত পরিমাণ মতো খেলে শরীরের জন্য অনেক ভালো। তাই কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখা আবশ্যক। তাই জেনে বুঝে নিয়মিত বাদাম খেলে এতে আপনার শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে।

তো যাই হোক, আমি মনে করি, কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। সুতরাং আশা করি এই বিষয়ে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকবেনা। আর যদি থেকেই থাকে পুনরায় পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। আজকের আর্টিকেলটি কেমন হয়েছে সে বিষয়ে আপনাদের মতামত কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই জনাবেন এবং বন্ধুদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

চাঁপাই আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url