কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি

কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি এটি বলা কষ্টকর। কারণ পুষ্টিগুণ ছাড়া খাবার হয় না। আপনি হয়তো ডায়েট সচেতন একজন ব্যক্তি। যে কোন ফল চাইলেও খেতে পারছেন না। কারণ এমন অবস্থায় আপনার মাথায় একটি চিন্তা কাজ করে কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি বা কোন ফলে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন থাকে। অর্থাৎ কোন ফল খাওয়ার মাধ্যমে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি
আমরা অনেকেই জানিনা কোন ফলে পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে আবার কোন ফলে পুষ্টি পরিমাণ বেশি থাকে।যে ফলগুলোতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি থাকে সেগুলোকে সুপার ফুট বলা হয়। এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি জানতে পারবেন কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি আরো জানবো কোন ফলে বেশি ভিটামিন, ভিটামিন সি এবং রাতে ফল খাওয়ার উপকারিতা, আঙ্গুর ফল খাওয়ার উপকারিতা।

ভূমিকা

ফল আমাদের শরীরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ খাবার। ফলকে পুষ্টির পাওয়ার হাউস বলা হয়। কারণ ফল আমাদের শরীরে পুষ্টির পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখতে, ওজন কমাতে এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে অনেক সময় বাচ্চার শরীর ভালো রাখতে বা নিজেদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি এটি জানা জরুরী। শরীরে যে পরিমাণ ভিটামিন দরকার তার বেশিভাগ আমরা ফল থেকে পেয়ে থাকি।

কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি

কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি এটি বলা খুব কঠিন। কারণ প্রত্যেক ফলে পুষ্টি থাকে। পুষ্টি ছাড়া ফল হয় না। এজন্য ফল হল পুষ্টির পাওয়ার হাউস। তবে কিছু ফল আছে যার মধ্যে পুষ্টি উপাদান সবচেয়ে বেশি সেগুলো হল-পাকা আম, কাঁঠাল,, পাকা পেঁপে, আনারস, পেয়ারা, লাল বাতাবি লেবু, বাঙ্গি, জাম, জামরুল, গোলাপজাম এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
আমলকি, পেয়ারা, লেবু, কামরাঙ্গা, পেঁপে, আম, জাম, কমলা, জলপাই, আতা, লিচু, এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।এমনকি ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় যে সকল খাবারগুলো থেকে সেগুলো হল, লেবু কদবেল, নারিকেল, খেজুর, তেতুল, গাব, জলপাই, ডালিম। উপরিক্ত ফলগুলো থেকে আমরা জানতে পারলাম কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি।

কোন ফলে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন থাকে

আমাদের সবারই কম বেশি জানা আছে ফল হলো ভিটামিনের প্রধান উৎস। কিন্তু হয়তো আমাদের অনেকেই জানে না কোন ফলে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন থাকে। কোন ফলে ভিটামিন বেশি থাকে এটি আমাদের জন্য জানা অতি প্রয়োজন। কারণ এটি জানা থাকলে আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী নিজে এবং শিশুদের ফল খাওয়াতে পারব। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য গড়ে প্রতিদিন ১১০ থেকে ১১৫ গ্রাম পরিমাণ ফল খাওয়া দরকার। চলুন আজকে জেনে নি কোন ফলে ভিটামিন সবচাইতে বেশি।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল: পেয়ারা, আনারস, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল, পাকা পেঁপে, বড় বাতাবি লেবু, জামরুল, বাঙ্গি, জাম ইত্যাদি। সব ঘরে ভিটামিন এ থাকে তবে পাকা ফলগুলোতে ভিটামিন এ সবচাইতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়।

ভিটামিন বি1 সমৃদ্ধ ফল: ডাবের জল, কলা, আনারস, বাঙ্গি কাঁঠাল পাকা আম ইত্যাদি

ভিটামিন বি2 সমৃদ্ধ ফল: আতা, বরই, লটকন, আমলকি, পাকা কাঁঠাল,ইত্যাদি।

কোন ফলে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি থাকে

আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে যে খাবারটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে তার নাম হলো ফল। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বিভিন্ন অপারেশন করার পর ক্ষত স্থান শুকানোর জন্য চিকিৎসকগণ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে বলেন। কোন ফলে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি থাকে এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন যে ধরনের ফলগুলো টক সে ফল গুলোতে ভিটামিন সি বেশি থাকে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল-কমলা, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস, লেবু, আমলকি, আম, জাম, জলপাই, লিচু ইত্যাদি এগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

রাতে ফল খাওয়ার উপকারিতা

ফল আমাদের শরীরের জন্য উপকারী বলে আমরা যেকোনো সময় ফল খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনাকে ফল খাওয়ার কিছু সময় জেনে নিতে হবে কারণ যেকোনো সময় ফল আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হয় না।ফল আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমাদের দেশে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফল পাওয়া যায়। ফল আমাদের পেট ভরায় পাশাপাশি স্বাস্থ্যের যত্ন নেই এমনকি ফল আমাদের ওজন কমায় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বক ভালো রাখে। কিন্তু আমরা ফল বিভিন্ন সময়ে খেয়ে থাকি। 
অনেকে ভাবেন রাতে ফল খাওয়া সঠিক সময় কিনা বা রাতে ফল খাওয়া যাবে কিনা।ফল খাওয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হল রাতে ফল খেলে শরীরের শর্করা এবং শক্তির মাত্রা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে।ঘুম আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সুস্থ থাকার জন্য ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই রাতে ফল না খাওয়াই উত্তম। আপনারা সূর্যাস্তের আগে ফল খেতে পারেন। 

তাহলে ফলের সব রকমের উপাদান শরীরে ভালোভাবে প্রবেশ করবে। সকালে নাস্তায় ফল খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। দুপুরে খাওয়ার অন্তত 30 মিনিট পর ফল খাওয়া উচিত। আবার অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকার পর ফল খেলে এসিডিটি বা হজমের সমস্যা হতে পারে।

আঙ্গুর ফল খাওয়ার উপকারিতা

আঙ্গুর আমাদের সবারই খুব পরিচিতি একটি ফল। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনে ভরপুর আঙ্গুর। আঙ্গুরে পাওয়া যায় ভিটামিন কে, সি এবং খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়াম। আঙ্গুর স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী একটি ফল। এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ-যা স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলের রানী আঙ্গুর আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আঙ্গুর বাধক্য রোদে কাজ করে। শরীরের রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্যতাহীন কে প্রতিরোধ করে। চলুন জেনে নিন আঙ্গুর ফল খাওয়ার উপকারিতা কি ?
আরও পড়ুনঃ
কিডনির জন্য: আঙ্গুরে যেসব উপাদান গুলো রয়েছে তা ক্ষতিকারক ইউরিক এসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। রোগ ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে। এতে আমাদের কিডনি ভালো থাকে।

চোখ ভালো রাখতে: বয়সের কারণে যারা চোখের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য এই ফলটি খুব বেশি কার্যকর।

বয়সের ছাপ দূর করতে: আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিকেল ত্বক নষ্ট করে দেয়। ঘরে থাকা ভিটামিন সি ও আন্টি অক্সিডেন্ট এ ফ্রী রেডিকেল বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরের বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।

মাথাব্যথা: আঙ্গুলে থাকা সমস্ত উপাদান মাইগ্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করে মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। কোন কারণে মাথাব্যথা শুরু হলে আঙ্গুর খেলে আরাম বোধ হয়।

স্তন ক্যান্সার: গবেষণায় দেখা যায় আঙ্গুরে উপাদান গুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম। তাই যারা ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন এমন রোগীরা খেতে পারেন নিয়মিত আঙ্গুর।

বদহজম দূর করতে: নিয়মিত আঙ্গুর খেলে বদহজম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হাড় শক্ত করে: আঙ্গুরি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ যেমন ম্যাঙ্গানিজ, লোহা, তামা যা হাড় শক্ত করতে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে থাকে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: আঙ্গুরে রয়েছে টরোস্টেলবেন নামে এক ধরনের যৌগ। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।এছাড়া আঙ্গুর আমাদের আরো কয়েকটি রোগ প্রতিরোধ করে থাকে সেগুলো হল ভুলে যাওয়া, অ্যাজমা প্রতিরোধ, টকের সুরক্ষায় চুলের যত্নে।

উপসংহার

এই পোস্টটি পড়ে আমরা জানলাম ফল আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। এবং আরো জানলাম ফল কোন ফলের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি কোন সময় খাওয়া ফল উত্তম। ফল এমন একটি খাবার যা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের নানা বিধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। তাই বাচ্চাদের ছোট থেকে ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ বাচ্চারা ছোটতে অনেক ভাজা পোড়া খাবারে আসক্ত হয়ে পরে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

চাঁপাই আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url